
নাজমুল আলম মুন্না :
বুধবার দুপুর ১২ টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে পল্লী চেতনার নির্বাহী পরিচালক মোঃ আনিছুর রহমানের সঞ্চালনায় বিশ্ব পানি দিবসের সিম্পোজিয়াম অনুষ্টিত হয়েছে। এনজিও ফোরাম, পল্লী চেতনা, প্রাকটিক্যাল এ্যাকশান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা ওয়াশা, পিএইচইউ, বাংলাদেশ ওয়াশ এ্যালায়েন্স, বিশ্ব ব্যাংক, ডব্লিউএসএসসিসি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইউনিক এবং ইউনিসেফ যৌথভাবে এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজনে করে । এবছর বিশ্ব পানি দিবসের মূল প্রতিপাদ্য “জল ও জীবিকা” এই বছর জাতীসংঘের এ ঘোষনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে পানি দিবসের সিম্পোজিয়াম শিরোনাম নির্ধারণ করা হয়েছে“ জল-জীবিকার স্বীকৃতি: স্থানীয় পেক্ষিত”।
সিম্পোজিয়াটি জনস্বাস্থ্য প্রকেীশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অরুন কুমার মন্ডল। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন এনজিও ফোরামের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোঃ লুৎফর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার ভৌমিক ও সাতক্ষীরা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল করিম।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহন করেন দৈনিক পত্রদূতের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য মোঃ আনিছুর রহিম, উত্তরনের মনিরুজ্জামান জমাদ্দার, প্রাকটিক্যাল এ্যাকশানের আহসান রকিব প্রমুখ।
সিম্পোজিয়ামে বক্তারা বলেন জলের সাথে জীবিকার সম্পৃক্ততা অনেক দিনের। আমাদের দেশের দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চলকে উপকূলীয় অঞ্চল হিসাবে গণ্য করা হয়, এর পুরোটাই নোনা পানির অঞ্চল । চারিদিকে পানি অথচ খাবার জন্য নিরাপদ পানি কোথাও নেই। অথচ এই অনিরাপদ পানিকে ঘিরেই দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে আসছে বছরের পর বছর। নদী-খাল ইজারার মাধ্যমে দখল হয়ে যাচ্ছে ফলে সুপেয় পানির ভয়াবহতার সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের জলাধার কে নষ্ট হতে দেওয়া যাবেনা, দেশকে মরুভূমির হাত হতে রক্ষা করতে হলে আমাদের পানির অপচয় রোধ করতে হবে। মানুষের কল্যানে সুপেয় পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে, এতে পানির শুন্যতা রোধ হবে এবং বাচবে জীব-বৈচিত্র, জীব-জন্তু ও পরিবেশ।
পানি দিয়ে বরফ তৈরি হচ্ছে, সেই বরফ মেশিনে ভাঙ্গানো হচ্ছে, সেই বরফ দিয়ে মাছ সংরক্ষিত করা হচ্ছে। নদীতে বাধ দিয়ে ঘেরে ঢোকানো হচ্ছে মাছ চাষের জন্য। নদী-খালে বাধ দেওয়ার ফলে নদীতে পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে, ভরাটকৃত নদী কোটি কোটি টাকা খরচ করে পূণরায় খনন করা হচ্ছে। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ সেই নদীতে চাষাবাদ করছে, খননের ফলে নদীর ফিরে পাচ্ছে নাব্যতা। নৌযান চলাচল ত্বরান্বিত হচ্ছে ফলে নৌপথে মালামাল পরিবহন সুবিধা হচ্ছে, প্রান্তিক জেলেদের একটি কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। উপরে উল্লেখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিন্তু মানুষের জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে। হয়তো সকল জীবিকাকে আমরা স্বীকৃতি দেবনা। যে সকল জীবিকা বর্তমান এবং অদুর ভবিষ্যতে আমাদের জন্য ভাল কিছু বয়ে আনবে সে সকল জীবিকাকে আমরা স্বীকৃতি দেব, সে সকল জীবিকার জন্য অর্থায়ন করবো। সিম্পোজিয়ামে জেলা ওয়াসান টাস্কফোর্স কমিটির সকল সদস্য, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতা, শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।