ইব্রাহিম খলিল ::
সাতক্ষীরায় স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় যুবলীগের হামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনছুর আহম্মেদ, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাতক্ষীরা সদর থানা ঘেরাও করে হামলাকারী যুবলীগ নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
সোমবার (২৬ মার্চ) বিকাল পৌনে ৬ টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের নিউ মার্কেক চত্বরে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ, সাতক্ষীরা সদর এমপি মীর মোস্কাক আহমেদ রবি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মুজিবর রহমান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম শওকত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান আলীসহ জেলা আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলায় আহতরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মুনছুর আহমেদ (তিনি সামান্য আহত হয়েছেন ) , জেলা যুবলীগের সদস্য মীর মহিতুল আলম, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাজী আক্তার হোসেন, জেলা তাতী লীগের সভাপতি মীর শাহিন, যুবলীগ নেতা বাবু ও ছাত্রলীগ নেতা তৌকিরসহ কমপক্ষে ১০ জন।
সাতক্ষীরা পৌর যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল কাদের ভয়েস অব সাতক্ষীরাকে জানান, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকালে সাতক্ষীরা নিউ মার্কেট চত্বরে পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা চলছিল। এ সময় জেলা যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে একটি মিছিল সেখানে উপস্থিত হয়। সভাস্থলে পৌছে মান্নান স্টেজে উঠে মাইক কেড়ে নিয়ে বলে আজ থেকে খেলা শুরু। আমার বিরুদ্ধে যারা মিছিল মিটিং করছে, তাদেরকে এখন খেলা দেখাবো। এতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তাতী লীগের সভাপতি প্রতিবাদ করলে যুবলীগ সভাপতি আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে মঞ্চে থাকা অতিথিদের উপর হামলা চালানো হয়। হামলায় সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়।
সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা ভয়েস অব সাতক্ষীরাকে জানান, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ মিছিল নিয়ে নিউ মার্কেট এলাকার কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার প্রাক্কালে বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে মান্নানের নেতৃত্বে লোহার রড, হকিস্টিক, রাম দা নিয়ে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এতে তাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান ও তৌকিরের অবস্থা আশংকাজনক।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান ভয়েস অব সাতক্ষীরাকে জানান, আমরা একটি মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে যোগদি। এর কিছু পরেই আমাকে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়। আমার বক্তব্য চলাকালে আমার প্রতিপক্ষরা আমাকে সেখান থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় আমার সমর্থকেরা প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায় সংঘর্ষ বাধে। এতে আমার সমর্থক আনোয়ার হোসেন অনু, তুহিন,মিলন, ইয়ারুল সহ কয়েক জন আহত জখম হয়েছে। তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ভয়েস অব সাতক্ষীরাকে জানান, জেলা যুবলীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান বক্তব্য দিতে গিয়ে হঠাৎ উস্কানিমূলক বক্তব্য শুরু করেন । এ সময় ( জেলা যুবলীগের) তার প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন প্রতিবাদ করলে মান্নান সমর্থকেরা তাদের উপর হামলা চালায়। তারা লোহার রড়, লাঠি, দা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহমেদ জানান, আওয়ামী লীগের কর্মসূচির ব্যাপারে আমাদের আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি। ঘটনা শুনে পুলিশ দ্রুত সেখানে পৌছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এখন সবকিছু স্বাভাবিক।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার বিকেলে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। তারা বেশ কিছু অভিযোগ তুলে আব্দুল মান্নানকে অবিলম্বে বহিস্কার দাবী জানান।
দলীয় নেতা-কর্মীরা জানান, মান্নানের বিরুদ্ধে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ করার কারণে মান্নান ও তার সমর্থকেরা চরম ক্ষুব্ধ। এ ছাড়া বেশ কিছুদিন আগে থেকে জেলা যুবলীগের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো।এসব কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
###
