
স্টাফ রিপোর্টার ::
সাতক্ষীরায় স্বামীর অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার পায়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বামী মোঃ জাহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন তার স্ত্রী সদর উপজেলার কুশখালী গ্রামের মৃত মোসলেম আলীর মেয়ে নুরুন্নাহার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নুরুন্নাহার বলেন, বিগত ২০০০ সালের ১৪ জানুয়ারী সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দেবনগর গ্রামের মৃত বিনইসরাইল ফকিরের ছেলে মোঃ জাহির উদ্দিনের সাথে ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামী আমার উপর অমানুষিক নির্যাতন করে আসছে। আমার সুখের কথা চিন্তা করে ভাইয়েরা বিভিন্ন সময় তাকে ৬/৭ লক্ষ টাকা প্রদান করে। কিন্তু তার পরও নির্যাতন কমেনি। বরং আরো ৫ লাখ টাকার জন্য আমার ভাইদের উপর চাপ দিতে থাকে। একপর্যায় ভাইয়েরা ১০/১২ লাখ টাকা খরচ সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুর এলাকায় একটি বসতবাড়ি নির্মাণ করে দেয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী লম্পট প্রকৃতির ও অত্যান্ত পরস্ত্রী কাতর। আমাদের ১৫ বছর বয়সি একমাত্র মেয়ে অনন্যা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়া লেখা করে। তারপরও আমার স্বামী জাহির উদ্দিন বিভিন্ন জায়গায় পরকীয়ায় আবদ্ধ হয়ে সংসারের প্রতি উদাসিন হয়ে পড়ে। পলাশপোল এলাকার জনৈক ট্রাক চালকের স্ত্রী উর্মী আরাকে ফুসলিয়ে এনে গত এক বছর ধরে স্বামী-স্ত্রী রুপে ঘর সংসার করছে। এছাড়া সীমান্ত অদর্শ কলেজে শিক্ষাকতা করাকালীন একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অশালিন আচারন করায় কলেজ কর্তৃপক্ষ তার স্বামীকে বহুবার সর্তক ও সাবধান করেছে। এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ও মেয়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদেরকে হত্যার চেষ্টা চালায়। বছরখানে আগে আমি, মেয়ে অনন্যা ও আমার বোন সামছুন নাহারকে কক্সবাজারে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে মহেশখালী এলাকায় নৌকা থেকে আমাকে ধাক্কা দিয়ে সাগরে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করলে সে যাত্রা প্রাণে রক্ষা পাই। এছাড়া ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ আমার বাবার বাড়িতে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করলে মেয়ে ছুটে এসে আমাকে রক্ষা করে।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী প্রায় সময় ভাড়াটিয়া গুন্ডা নিয়ে বাড়িতে এসে উচ্ছশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩ মার্চ ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে বাড়িতে ঢুকে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য জিনিপত্র ভাংচুর করে। এসময় কুরুচিপূর্ন গালিগালাজ দিয়ে বলে আমি তোকে তালাক দিয়েছি এবাড়ি ছেড়ে চলে যা। খবর পেয়ে এলাকার লোকজন ছুটে আসলে সে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে চলে যায়। এঘটনায় সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্বামীর নামে একটি মামলা চলমান আছে। এসব ঘটনা আড়াল করার জন্য আমার স্বামী জাহির উদ্দিন গত ৮ মার্চ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের সামনে মিথ্যে তথ্য উপস্থাপন করেছে। তিনি দুঃচরিত্রবান স্বামীর অত্যাচার নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
##