
আকরামুল ইসলাম ::
আবহাওয়া অফিসের ভাষ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা না থাকলেও প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিপাকে পড়েছেন সাতক্ষীরার কৃষকরা। এখনো ১১ হাজার ৫৮৩ হেক্টর জমির ধান রয়েছে জমিতে। এসব ধান এখন নষ্টের পথে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, জেলার সাত উপজেলায় এ বছর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭৬ হাজার হেক্টর। তবে বেরো ধান চাষ হয়েছে ৭৭ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে। এক হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। এ আবাদের মধ্যে ৩০ ভাগ হাইব্রিড, ৫০ ভাগ জমিতে ২৮ জাতের ধান, বাকি জমিতে বিরি-৬৩, ৬৭, ৮১, ৮৪ ও বিনা-১০ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ধানের ফলন হয়েছে চার টন।
সাতক্ষীরা সদরের মাছখোলা এলাকার কৃষক সোলাইমান হোসেন বলেন, আমার ৮ বিঘা জমির ধান মাঠে পড়ে রয়েছে। ধান কেটেছি। তবে বাড়িতে তোলার সময় পাইনি। মাঠের মধ্যে বৃষ্টিতে সব ভিজে গেছে। ধানগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এদিকে পানিনিষ্কাশনব্যবস্থা না থাকায় ধান লাগাতে দেরি হয়েছিল। সে কারণে কাটতেও দেরি হয়েছে। এখন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলাম।
একই এলাকার কৃষক নুর জামাল বলেন, আমি ছয় বিঘা জমিতে ধান করেছি। পৌনে দুই বিঘা জমির ধান বাড়িতে তুলতে পেরেছি। বাকি ধান মাঠে পড়ে রয়েছে। খুব চিন্তায় রয়েছি। শুনেছি ঝড়-বৃষ্টি হবে। খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। এ ছাড়া বৃষ্টির পর পানি দ্রুত সরানোর ব্যবস্থা নেই।
তিনি আরও বলেন, এই ধান করতে আমার ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। এই এলাকার তিন ভাগের এক ভাগ জমির ধান এখনো মাঠে রয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির উপপরিচালক নুরুল ইসলাম জানান, শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলায় জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর, তালা ও কলারোয়া উপজেলায় কিছু জমির ধান জমিতে রয়েছে। জেলায় বর্তমানে ৮৫ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাকি রয়েছে ১৫ ভাগ। প্রায় ১১ হাজার ৫৮৩ হেক্টর জমির ধান রয়েছে জমিতে।
তিনি বলেন, সব চাষির ধান কেটে ফেলার জন্য আগেই বলা হয়েছিল। তবে অনেকেই এখনো জমিতে ধান রেখেছেন। তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে খামারে ধান তুলে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। জেলার সব কৃষি কর্মকর্তা, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করে কর্মস্থলে থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবমুক্ত হওয়ার পর পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।