
নাজমুল হক :
সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশে সাংবাদিকদের সাথে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দীনের পরিচিতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দীন বলেছেন, দেশে কখনও আর অগণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসবে না। সরকার পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু গণতন্ত্র পরিবর্তন হবে না। তিনি বলেন, ঢাকায় থাকা কালীন সময়ে সাতক্ষীরার উন্নয়নে তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে হতো না। কিন্তু এ জেলার যোগদানের পর মনে হয়েছে সাতক্ষীরা অনেক সম্ভাবনাময় জেলা। পর্যটন, চিংড়ি শিল্পের জন্য এ জেলার গুরুত্ব অনেক।
সাংবাদিকরা জেলার চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা নিয়ে নবাগত জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, চিকিৎসা সেবায় অবহেলাদের বিষয়ে সিভিল সার্জনের সাথে ইতমধ্যে কথা হয়েছে। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সভায় সাংবাদিকরা জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্টান সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার বেহাল দশা তুলে ধরে বলেন, এই দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জরুরী ভিত্তিতে নজর দেওয়া প্রয়োজন। এখানে লেখাপড়ার পরিবেশ মারাত্বক ভাবে ব্যবহত হচ্ছে। শিক্ষকরা ঠিকমত ক্লাস নেন না। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অযোগ্যতা ও অদক্ষতার ফলে দিন দিন শিক্ষার পরিবেশ ব্যহত হচ্ছে। অধিকাংশ শিক্ষক কচিং বানিজ্য নিয়েই ব্যস্ত থাকছেন। অথচ এই ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জেলার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করে জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো: মহিউদ্দিন বলেন, শিঘ্রই ওই দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে তিনি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। শিক্ষার পরিবেশ যাতে ফিরে আসে সে জন্য যা যা করা প্রয়োজন অভিভাবকদের সাথে কথা বলে তা করবেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। তাপদের জন্য কিছু করার দরকার রয়েছে। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নতুন ভবন যাতে হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খুলনা রোড মোড়ে এ বছর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ করা হবে। পরিচিতিমূলক সভায় জেলার বিভিন্ন বিভাগের সমস্যা ও সম্ভাবনার বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, প্রাক্তন সভাপতি আবু আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, এনটিভি ও যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি সুভাষ চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক অরুণ ব্যানার্জী, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, ইনকিলাবের শেখ আব্দুল ওয়াজেদ কচি, প্রাক্তন সভাপতি মনিরুল ইসলাম মিনি, দৈনিক সাতদনীর সম্পাদক ও প্রকাশক হাবিবুর রহমান হাবিব, দৈনিক দক্ষিণের মশালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম, রামকৃঞ্চ চক্রবর্তী, অসীম বরণ চক্রবর্তী, আব্দুস সামাদ, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, মোহাম্মদ আলী সুজন, রেজাইল ইসলাম প্রমুখ।
সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের নিকট জেলার চিকিৎসা সেবা, জলমহল ইজারা, কোচিং বাণিজ্য, সরকারি দুই স্কুলে প্রাইভেট বাণিজ্য, জলাবদ্ধতা, জেলা শহরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, শহরের ভিতর যত্রতত্র ট্রাক পার্কিং, কপোতাক্ষ নদ ও বেতনা নদী খননে দুর্নীতি, পোনা জীবাণুমুক্ত করার জন্য পিসিআর ল্যাব চালু করা, সুন্দরবনের সুরক্ষা, জিও এবং এনজিও এর মধ্যে সমন্ময় স্থাপন, মাদক প্রতিরোধসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। নবাগত জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের এসব বক্তব্য মনযোগ সহকারে শোনেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতিমূলক এই সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ এফ এম এহতেশামূল হক, জেলা তথ্য কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম মল্লিক।