
স্টাফ রিপোর্টার :
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পাওনা টাকার চেক চাইতে গিয়ে সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অখিদপ্তরের (এলজিইডি) অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষক মিজানুর রহমানের হাতে এক ঠিকাদার ও তার পুত্র জখম হয়েছে। সোমবার বেলা দুই টার দিকে সাতক্ষীরা এলজিইডি অফিসের হিসাব রক্ষকের রুমেই ঘটনাটি ঘটেছে। আহত ঠিকাদার আমানত মল্লিক (৫২) ও ছেলে আসাদুজ্জামান রনি (২৮) কে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় হিসাব রক্ষক মিজানুর রহমানকে আসামী করে একটি এজহার দায়ের করা হয়েছে।
জানাগেছে, খুলনার খালিশপুরের মুজগুনি এলাকার মেসার্স আমানত এন্টারপ্রাইজ-এর সত্বাধিকারী আমানত মল্লিক সাতক্ষীরা এলজিইডি‘র অফিসের বিভিন্ন সময়ে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ করেছেন। ৮০ লাখ টাকারও বেশি তার পাওনা রয়েছে এলজিইডির কর্তৃপক্ষের কাছে। গত ১৫ দিন আগে ওই টাকার মধ্যে ২১ লাখ ৭২ হাজার টাকার একটি চেক দেয়ার কথা বলে এলজিইডির হিসাব রক্ষক মিজানুর রহমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করেন। সোমবার ২১ লাখ ৭২ হাজার টাকার চেক দেয়ার কথা ছিল।
হিসাব রক্ষক মিজানুর রহমানের কথামত ঠিকাদার আমানত মল্লিক (৫২) ও ছেলে আসাদুজ্জামান রনি (২৮) সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরায় এলজিইডি অফিসে আসেন। এক পর্যায় হিসাব রক্ষক মিজান ঈদের আগে কোন চেক হবে না জানালে ঠিকাদার আমানত মল্লিক ঘুষের ৮০ হাজার টাকা ফেরত চান তার কাছে। হিসাবরক্ষক মিজানুর রহমান ঘুষের ৮০ হাজার টাকা গ্রহনের বিষয়টি অস্বিকার করেন। এক পর্যায় উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত কথাকাটাকাটি হয়। বিষয়টি অফিসের কর্মকর্তা -কর্মচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হিসাব রক্ষক মিজানুর রহমান তার কক্ষে থাকা লোহার স্কেল দিয়ে ঠিকাদার আমানত মল্লিককে মারপিট শুরু করে। এসময় সাথে থাকা ছেলে আসাদুজ্জামান রনি প্রতিবাদ করলে মিজানুর রহমান ছেলে রনিকেও রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এতে ঠিকাদার পিতা ও পুত্র দুই জনই আহত হন। তাদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ঘটনার পর সোমবার বিকেলে আমানত মল্লিক সাতক্ষীরায় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনার বিচার দাবী করেন। সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদার আমানত মল্লিক জানান, তিনি বাদী হয়ে এলজিইডির হিসাব রক্ষক মিজানুর রহমানকে আসামী করে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি এজহার দিয়েছেন।
সাতক্ষীরা এলজিইডি‘র নির্বাহী প্রকৌশলী সাহেদুর রহিম তার অফিসে ঠিকাদার আহত হওয়ার ঘটনাটি দু:খজন মন্তব্য করে বলেন, তিনি বিষয়টি জানার পরপরই অফিসের সকল স্টাফদের নিয়ে বসেছেন। ঘটনাটি জানার চেষ্টা করছেন। পাওনা টাকার চেক দেয়ার কথা বলে ঘুষ গ্রহনের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী।
এদিকে, হিসাব রক্ষক কাজী মিজানুর রহমান ঘুষ গ্রহনের বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, ঠিকাদার আমানত মল্লিকের সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে। এর বেশি কিছু ঘটেনি।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি এমদাদ শেখ জানান, তিনি বিষয়টি মৌখিক ভাবে শুনেছেন। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।