সিআইডি আসামীদের বাঁচাতে চাইছে : সোলাইমানের স্ত্রী আয়েশা


454 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
সিআইডি আসামীদের বাঁচাতে চাইছে : সোলাইমানের স্ত্রী আয়েশা
মার্চ ২১, ২০১৮ ফটো গ্যালারি সাতক্ষীরা সদর
Print Friendly, PDF & Email

ইব্রাহিম খলিল ::
বাদি পক্ষের কাছ থেকে দাবিকৃত পাঁচ লাখ টাকা না পেয়ে আসামীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা সোলাইমান হত্যা মামলার সাক্ষী ফারুক হোসেনকে সিআইডি গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ঝায়ামারি গ্রামের নিহত সোলাইমানের স্ত্রী আয়েশা খাতুন।
আয়েশা খাতুন লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার স্বামী সোলাইমান গাজী কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। একই গ্রামের ওহাব পেয়াদার সঙ্গে তার স্বামীর জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। সেজন্য ওহাব পেয়াদা তার স্বামীকে কয়েকবর হুমকিও দেয়। এরই জের ধরে গত বছরের ১৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে সন্নাসীর চকের সাহেব আলীর দোকান থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে আশাশুনি উপজেলার কৈখালি গ্রামের বেড়িবাঁধের উপর জবাই করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন তার দেবর সামিউল্লাহ গাজী বাদি হয়ে ওহাব আলী পেয়াদাসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামীর মধ্যে নয়জন মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে ১৪ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে আবেদন করলে সাতজন জামিন লাভ করে। সেলিম পেয়াদা ও জলিল পেয়াদার জামিন না’মঞ্জুর হয়। পরবর্তীতে ২৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তভার সিআইডি’র(অর্গানাইজ ক্রাইম) উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবীরের উপর ন্যস্ত হয়। গত ফেব্র“য়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে হুমায়ুন কবীর মামলার সাক্ষী আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য ফারুক হোসেনের মাধ্যমে তার (আয়েশা) কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে মামলা উল্টে দেওয়ার হুমকি দেন তদন্তকারি কর্মকর্তা। সম্প্রতি আসামী ওহাব পেয়াদা তার নাম বাদ দিলে প্রকৃত ঘটনা সন্ন্যাসীর চকের আজাহারুলের মাধ্যমে আদালতে জবানবন্দি হিসেবে দেওয়ানোর ব্যবস্থা করবে বলে ছেলে শাহীনকে কয়েক বার মোবাইল ফোনে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয় স্থানান্তর করা হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কালিগঞ্জ উপজেলার সন্নাসীর চক গ্রামের গোলাম মোস্তফা ঢালীর ছেলে আজাহারুল ইসলামকে খুলনা থেকে গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠায়। ওইদিন সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার বিচারিক হাকিম রাজীব রায় এর খাস কামরায় আজাহারুল তার ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে নিজেকে সোলায়মান হত্যার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীসহ কাল্পনিক জবানবন্দি দেয়। এরই সূত্র ধরে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় শহরের পাকাপুলের উপর থেকে গ্রেফতার করা হয় মামলার সাক্ষী ফারুক হোসেনকে।
তিনি আরো জানান,মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর গত ১১ জানুয়ারি দুপুর দু’ টোর দিকে সাতক্ষীরা আদালতের সামনে থেকে এজাহারভুক্ত আব্দুর রশীদসহ চারজনকে ধরে নিয়ে পরে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন। একইভাবে এজাহারভুক্ত আসামীদের দারা প্রভাবিত হয়ে সোলাইমানের সঙ্গে বিরোধ থাকা আজাহারুলকে দিয়ে শেখানো জবানবন্দি বিচারকের কাছে উপস্থাপন করিয়ে এজাহারভুক্ত আসামীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ি আজাহারুলের ১৬৪ ধারার জবানবন্দি প্রদানের ৩০ মিনিটের মধ্যে কোন প্রকার যাঁচাই বাছাই ছাড়াই মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে সাক্ষী আজাহারুলকে গ্রেফতার করেছেন। অন্য তিন সাক্ষীকে তিনি ধরার জন্য হন্যে হয়ে খুঁজছেন।
এ ব্যাপারে ওহাব আলী পেয়াদা তার বিরুদ্ধে সোলায়মান হত্যাসহ আনীত বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি শাহীনের সঙ্গে এ ধরণের কোন কথা বলেননি। আজাহারুলের সঙ্গে তার কোন সখ্যতা নেই।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সোলাইমান হত্যা মামলার আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য দূণীতিবাজ তদন্তকারি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীরের কাছ থেকে মামলার তদন্তভার অন্যত্র দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিআইডি’র সদর দপ্তরের বিশেষ পুলিশ সুপারের(অর্গানাইজ ক্রাইম) হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত সোলাইমানের ভাই সামিউল্লাহ গাজী ও ছেলে শাহীন গাজী।
##