সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ, ক্ষতিপূরণ দাবিতে মামলা


378 বার দেখা হয়েছে
Print Friendly, PDF & Email
সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ, ক্ষতিপূরণ দাবিতে মামলা
মার্চ ২১, ২০১৬ জাতীয় ফটো গ্যালারি
Print Friendly, PDF & Email

ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকম ডেস্ক :
সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে কয়লাবোঝাই কার্গোডুবির একদিন পর পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবিতে ছয় জনকে আসামি করে মামলা করেছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ।

এছাড়া সোমবার সকাল থেকে শ্যালা নদীতে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

বিআইডাব্লিউটিএ-এর খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আশরাফ হোসেন জানান, সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে আবারও নৌ দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের নির্দেশে বিআইডাব্লিটিএ সোমবার সকাল থেকে শ্যালা নদীতে সাময়িকভাবে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এখন থেকে শ্যালা নদীর পরিবর্তে মংলা-ঘষিয়াখালী নৌপথটি ব্যবহৃত হবে। এ সিদ্ধান্ত কার্যকরে কোস্টগার্ড, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো হয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম জানান, সুন্দরবনের পরিবেশগত ও জলজ প্রাণির ক্ষতির আশঙ্কায় পূর্ব বনবিভাগ প্রাথমিকভাবে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবিতে বাগেরহাটের শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের করেছে।

তিনি জানান, রোববার মাঝরাতে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার সুলতান মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ডুবে যাওয়া কার্গো সি হর্স-১ এর মালিক মনিরা কবির, চট্রগ্রামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমতা শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং এজেন্সির  মালিক আজিজুর রহমান, এজেন্সির ম্যানেজার জামাল হোসেন, কার্গোর মাস্টার মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, পাইলট মো. ইসমাইল ফরাজি ও শুকানী সহিদুল ইসলামকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

সাইদুল আরও জানান, ডুবে যাওয়া জাহাজটিকে উদ্ধার কাজ শুরু করা যাবে কি-না বা আদৌ উদ্ধার করা যাবে কি-না সে সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা রয়েছে কার্গোর মালিক পক্ষের।

তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মালিক পক্ষের কোন লোক ঘটনা স্থলে যাওয়ার জন্য বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে তিনি জানান।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার ফারুকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়া জাহাজটি বর্তমানে ৩০ ফুট পানির নিচে রয়েছে। জাহাজটির অবস্থান নির্ণয় করে সেখানে মার্কিংয়ের ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া চলছে। তবে সোমবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শুরু হয়নি ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজটির উদ্ধার অভিযান।

জাহাজ ডুবির ঘটনায় পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চার সদস্যের তদন্ত কমিটি ও বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের তিন সদস্যের আলাদা তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত কাজ শুরু করেছে। সুন্দরবন বিভাগের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাছে দাখিল করার কথা। আর জেলা প্রশাসনের গঠিত আলাদা তদন্ত কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীর হরিণটানা এলাকায় শনিবার বিকেলে ১ হাজার ২৩৫ টন কয়লাবোঝাই কার্গো জাহাজ ‘সি হর্স-১’ তলা ফেটে ডুবে যায়।

এর আগে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর শ্যালা নদীতে ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ নামে একটি ওয়েল ট্যাঙ্কার ডুবে গেলে নদীতে ছড়িয়ে পড়ে তেল।