
ভয়েস অব সাতক্ষীরা ডটকম ডেস্ক :
টাইফয়েডের প্রথম উপসর্গ হচ্ছে জ্বর, দুর্বলতা, মাথা ব্যাথা ও পেটে ব্যাথা। রোগ যত খারাপ পর্যায় যায় তখন তীব্র ডায়রিয়া, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুদামান্দা, ত্বকের শুষ্কতা, শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া এসব সমস্যাও সময়ের সাথে দেখা দেয়। উপসর্গ সাধারণত সঠিক চিকিৎসার সঙ্গে ২-৪ সপ্তাহের মধ্যে উন্নত হয়।
একবার টাইফয়েড ধরা পড়লে ডাক্তার টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়া মারার জন্য এন্টিবায়োটিক নির্দেশ করে। এন্টিবায়োটিকের সম্পূর্ণ কোর্স পূরণ করা গুরুত্বপূর্ণ যাতে ভাইরাসের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। অন্যথায় বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যাবহারের মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে এই অসুস্থতা ছড়ানো থেকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই রোগ থেকে পরিত্রান এবং দ্রুত পুনরুদ্ধার সম্ভব।
১। রসুন
রসুনের যে ঝাঁজালো আঁশ আছে তা টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তুলবে। তাছাড়া, এটা শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিনের নির্মূল করে পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন ২টি রসুনের কোষ খালি পেটে সপ্তাহ দুই সপ্তাহ খাবেন। এতে করে টাইফয়েড জ্বরের উপসর্গ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
এছাড়া আপনি আধা চামচ রসুন কুচি, এক কাপ দুধ এবং চার কাপ পানি একসঙ্গে মিশিয়ে তা চুলায় দিয়ে ঘন করে নিয়ে পান করতে পারেন। প্রতিদিন ৩ বার খেতে হবে।
বিঃদ্রঃ রসুন গর্ভবতী মহিলা এবং ছোট বাচ্চাদের জন্য খাওয়া নিষিদ্ধ।
২। পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতা টাইফয়েডের জন্য আরেকটি কার্যকরী চিকিৎসা। এই ঔষধি পাতা এন্টিবায়োটিক সমৃদ্ধ যা টাইফয়েডের ব্যাকটেরিয়া থেকে পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে। তাছাড়া, এটা জ্বরকে নিম্নস্তরে আনতে, পেটকে শান্ত রাখতে এবং আপনার ইমিউন সিস্টেমকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে।
এক কাপ পানিতে এক চামচ আদা কুচি এবং সাথে ২০টি পুদিনা পাতা দিতে হবে। সবকিছু একসাথে মিশিয়ে তা সিদ্ধ করে অর্ধেকে আনতে হবে। লিকারের সাথে অল্প পরিমানে মধু মিশিয়ে এই ‘চা’ দিনে ২-৩ বার পান করতে হবে কিছুদিন যাবত।
এছাড়া ৬-৭টি পুদিনা পাতার রস বের করে তাতে অল্প পরিমানে গোল মরিচের গুড়া মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার খাওয়া যেতে পারে।
৩। লবঙ্গ
লবঙ্গ টাইফয়েড চিকিৎসার জন্য সহায়ক। লবঙ্গের উপস্থিত তেলে ব্যাকটেরিয়ারোধী বৈশিষ্ট্য থাকে যা আপনার টাইফয়েডের ভাইরাস মারতে সাহায্য করে। লবঙ্গ বমি ও পাতলা পায়খানা দুটি টাইফয়েডের উপসর্গ থেকে পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে।
আট কাপ পানিতে ৫-৭টি লবঙ্গ দিন।
পানি অর্ধেক হয়ে আসা পর্যন্ত সিদ্ধ করুন।
চুলা থেকে নামিয়ে ঢাকনা দিন এবং ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
লিকারটি ছেকে নিন এবং সারাদিন একটু পর পর পান করতে থাকুন।
অন্তত এক সপ্তাহের জন্য এই ভেষজ চিকিৎসা অনুসরণ করুন।
৪। কলা
কলা টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীর জ্বর ও ডায়রিয়া নিরাময়ে সাহায্য করে। কলায় শাসজাতীয় ফাইবার থাকে যা পাকযন্ত্রে যকৃতরসে কাজ করে ডায়রিয়া নিরাময় করে। তাছাড়া, কলায় উপস্থিত পটাসিয়াম জ্বর ও পাতলা পায়খানার সময় হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইট প্রতিস্থাপন করতে সাহায্য করে।
আপনার টাইফয়েড সরবরাহ প্রশমিত হওয়া পর্যন্ত দৈনিক ২-৩টি পাকা কলা খেতে হবে।
অন্যথা, দুইটি কলা ভর্তা করে অর্ধেক কাপ দই এ মিশিয়ে তাতে ১ চামচ মধু যোগ করুন। কয়েক সপ্তাহের জন্য ২-৩ বার প্রতিদিন এটি খান।
৫। উচ্চ-পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার
যখন আপনি টাইফয়েড থেকে দুর্বল হয়ে যান তখন আপনার শরীরে সঠিক পুষ্টি প্রদান করা উচিত যা একটি বিশেষ খাদ্য তালিকা অনুসরণের মাধ্যমে হতে পারে। একটি ভাল খাদ্য আপনার শরীরের তরল এবং ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য এবং আপনার ইমিউন সিস্টেম অনুমোদনে সাহায্য করে।
শরীরে শক্তি প্রদানের জন্য আপনাকে ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেতে হবে।
আপনার শরীরের পুনরুদ্ধারের জন্য ডিম ও দুধের মত উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
উচ্চকার্বোহাইড্রেট খাবার শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি পূরণে করার জন্য আপনার খাদ্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা আবশ্যক।