বি.এম. জুলফিকার রায়হান ::
কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প (১ম পর্যায় ও ২য় পর্যায়)-এর আওতায় তালার পাখিমারা বিলে বাস্তবায়িত জোয়ারাধার (টিআরএম) কার্যক্রমের বকেয়া ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে পাখিমারা বিল সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী সংবাদ সম্মেলন’র আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে জালালপুর ইউনিয়নের সাতপাকিয়া গ্রামের ভুক্তভোগি জমি মালিক মো. রবিউল ইসলাম মুক্তি বলেন, এঅঞ্চলের কপোতাক্ষ অববাহিকায় দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ২৮৬ কোটি ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে গত ২০১১-১২ অর্থ বছরে টিআরএম ভুক্ত পাখিমারা বিলের চারপাশে ১২,৮৭ কি. মি. পেরিফেরিয়াল বাঁধ নির্মাণ শুরু করে এবং ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে তা শেষ করে। এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ড ভূমি অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ প্রদানের আশ্বাস দিয়ে ২০১১ সালের পরিবর্তে ২০১৫ সালে টিআরএম প্রকল্প চালু করে। ১ম পর্যায় প্রকল্পের ৬ বছর টিআরএম চলাকালীন সময়ে পাখিমারা বিলের জমির মালিকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়ার কথা ছিল ৪০ কোটি ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৯১২ টাকা। কিন্তু সেখানে আমরা জমি মালিকরা সরকার থেকে ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ বছরে মোট ১০ কোটি ১২ লক্ষ ৭২ হাজার ৭৬৪ টাকা পেয়েছি।
তিনি বলেন, প্রথম ২ বছরের বকেয়া টাকাসহ পরবর্তী ৪ বছরের ২৯ কোটি ৮৮ লক্ষ ৭৪ হাজার ১৪৮ টাকা আমরা এখনো বুঝে পাইনি। এছাড়া ক্ষতিপুরণের টাকা উত্তোলনের জন্য সরকারের শর্তানুযায়ী এস.এ খতিয়ানের পর্চা, নামপত্তন, ক্রয়ের দলিল, পিঠ দলিল, হাল জরীপের পর্চা, খাজনা প্রদানের হাল দাখিলা, প্রাপ্য জমির হিসাব বিবরণী, নাগরিক সনদপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিসহ ১২ রকমের কাগজ জেলা প্রশাসকের এল.এ শাখায় জমা দিতে হয়। এসকল শর্ত পূরণ করা সাপেক্ষে যাদের প্রথম বছরের টাকা ছাড় করা হয়েছে তাদের অনেকে অজানা কারণে ২য় বছর টাকা উত্তোলন করতে পারেনি। অধিকাংশ কৃষকের প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও পরবর্তী ৪ বছর (২০১৭-১৮ থেকে ২০২০-২১) ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি এবং তাদের জমিতে ফসলও ফলানো সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ক্ষতিপূরণের টাকা বাকি থাকা অবস্থায় ২য় প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় ৫৩১ কোটি ৭ লাখ টাকা। অথচ ২০১৩ সাল হতে অদ্যাবধি ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও সরকারের পক্ষ থেকে বাকী অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদান করা হয়নি।
রবিউল ইসলাম মুক্তি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য টাকা বরাদ্দ করেছে। একনেকে তা’ পাশ হয়েছে। কিন্তু এসব শুধু স্বপ্নে দেখার মতো। আমরা জমি মালিকরা সরকার থেকে টিআরএম বাবদ কোনও ক্ষতি পূরণ পাচ্ছি না। সেই জন্য আমরা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদনও করেছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সমাধান পাওয়া যায়নি। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ১ম পর্যায় প্রকল্পের বকেয়া ক্ষতিপূরণের টাকা এবং চলমান ২য় পর্যায় প্রকল্পের ক্ষতিপূরণের টাকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সহজ উপায়ে প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।