আবু ছালেক ::
ব্যাপক জাকজমকপুর্ন ভাবে শুক্রবার বিকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে, এনআই ইসলামীয়া লাইব্রেরি ও এন আই যুব ফাউন্ডেশনের সহযোগীতায় ও ফিংড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের আয়োজনে, আলহাজ্ব মো: নজরুল ইসলামের ৭১ তম জন্ম দিনে কেক কেটে জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। এন আই ইসলামীয়া লাইব্রেরী ফিংড়ী বাজার শাখার সভাপতি সেলিম রেজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্হিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন অর রশিদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক উসমান গনি, সদস্য এসএম শওকত হোসেন,শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি,সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আব্দুর রশিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো:রাশিদুজ্জামান রাশি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও এন আই ইসলামীয়া লাইব্রেরী এবং এন আই যুব ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মনিরুল হোসেন মাসুম,জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মোঃ: মিজানুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ আশিকুর রহমান,ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো:লুৎফর রহমান, ফিংড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মো:সামছুর রহমান, ব্যাংদহা এন আই নজরুল ইসলাম যুব ফাউন্ডেশনের সভাপতি শেখ মোনায়েম হোসেন, সদর উপজেলা যুব লীগের সভাপতি, মোঃ জাহিদ হাসান,সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মোঃ: মঈনুর ইসলাম,যুগ্ম আহবায়ক মো: সোহাগ হোসেন,সহ ও সহযোগি অঙ্গ সংগঠনের নেত্রীবৃন্দ, এ সময় উপস্হীত ছিলেন
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলামের সহধর্মিনি মিসেস সালেহা ইসলাম শান্তি, এ ছাড়া উপস্হিত ছিলেন মেম্বর সাংবাদিক মো: আবু ছালেক,মাহফুজ সরদার,খান আ: হামিদ,আরশাদ আলী,জাহিদুজ্জামান বাবু,দিপংকর কুমার ঘোষ,রেবেকা সুলতানা,রত্না রানী,সালমা খাতুন,
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান,ফিংড়ীর কৃতি সন্তান আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলামের ৭১-তম শুভ জন্মদিন পালন করা হয়েছে। ’৭০ পেরিয়ে ’৭১-এ পা রাখলেন তিনি।১৯৫৩ সালের এইদিনে তিনি সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের উত্তর ফিংড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল জব্বার ও মাতার নাম রিজিয়া সুলতানা। তাঁর শৈশব কেটেছে এক সময়ের প্রমত্তা মরিচ্চাপ নদীর পাড়ে ছায়া সু-নিবিড় শান্তির নীড় উত্তর ফিংড়ী গ্রামে। একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে জেলাসহ দেশের বাইরে। সাতক্ষীরা কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরা কলেজের ছাত্র সংসদের কমনরুম বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। শৈশব থেকে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক। মুজিব আদর্শকে বুকে ধারণ করে তিনি ব্যবসার পাশাপাশি জনসেবায় আত্ম নিয়োগ করেন। ১৯৯২ সালে তিনি ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ছাতা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। অবহেলিত ফিংড়ী ইউনিয়নকে গড়ে তোলেন তিলোত্তমা রূপে। ২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে দ্বিগুন ভোটের ব্যবধানে জামায়াতের প্রার্থীকে পরাজিত করেন তিনি। সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর তিনি স্বচ্ছতা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। সে কারণে তাকে সততার প্রতিক বলা হয়। অবহেলিত সাতক্ষীরা সদর উপজেলার প্রত্যেকটি জনপদকে গড়ে তোলেন উন্নয়নের মডেল হিসেবে। দুর্নীতিমুক্ত সদর উপজেলা পরিষদ গড়ে তুলে তিনি জননন্দিত হয়েছেন। ২০০৪ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৪ সাল থেকে অদ্যাবধি তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগকে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করেন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত বিরোধী মুভমেন্টে তার ভূমিকা দলকে করেছে সুসংগঠিত। ১৯৯৫ সালে ফিংড়ী ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি সততার প্রতিক হিসেবে শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের হাত থেকে গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি পদক। এছাড়া তিনি কাজী নজরুল স্বর্ণ পদক’ কবি জসিম উদ্দীন পদক’ মাদার তেরেসা পদকসহ অসংখ্য পদক ও পুরস্কার পেয়েছেন।প্রথম জীবনে শিক্ষকতা করতেন, পরে ব্যবসা। ১৯৭০ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ ছাত্রসংসদের কমনরুম সম্পাদক ছিলেন। বাবার হাত ধরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে হাতে খড়ি। ১৯৮৪ সালে ছিলেন আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের ট্রেজারার। ১৯৯৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সাতক্ষীরা সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। ১৯৯৭ সালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে নির্বাচিত হন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ২০১৫ সালেও পুনরায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। সর্বশেষ ২০২২ সালে জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
মো. নজরুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নে। তিন ভাইয়ের মধ্যে নজরুল ইসলাম সবার বড়। তার মেঝ ভাই কলারোয়া বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি মারা গেছেন। ছোট ভাই ফিংড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। নজরুল ইসলামের দুই মেয়ে এক ছেলে। তার সহধর্মিনী মিসেস সালেহা ইসলাম শান্তি অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী, বর্তমানে গৃহিনী। বড় মেয়ে নূর জাহান জেসমিন বিবাহিত। বড় জামাই জেলা জজ। ছোট মেয়ে আইরিন পারভীন অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে খুলনা রোটারী হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। ছোট জামাতা-কেডিএ’র সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী। একমাত্র ছেলে রাজু আহম্মেদ ডাক্তারী পাশ করে বর্তমানে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে সরকারি চাকরিরত।
উত্তর ফিংড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মো: নজরুল ইসলারে লেখাপড়া শুরু। পি.এন হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ডিগ্রি পাশ করেন।
ছাত্র জীবন শেষ করার পর অনেক দিন শিক্ষকতা করেছেন। প্রথম ১৯৭৪ সালে গাভা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে চাকরি জীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে শিমুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তালার সরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনেক দিন শিক্ষকতা করেছিলেন। শিক্ষকতা ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করেন। চিংড়ি চাষ, বাজারজাতকণসহ ছোটখাটো ব্যবসা করেন। নজরুল ইসলামের বাবা আব্দুল জব্বার আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। পিতার কাছ থেকে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিষয়ে বুঝতেন। পরবর্তীতে তাকে রাজনীতিতে সহযোগিতা করেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের সাহেব, স ম আলাউদ্দীন, সৈয়দ কামাল বখত সাকি সাহেবরা। ছাত্র রাজনীতিতে তিনি ১৯৭০ সালে প্রবেশ করেন। ১৯৮৪ সালে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের ট্রেজারার ছিলেন নজরুল ইসলাম। তারপর সাতক্ষীরা আসেন। সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য থাকার পর ১৯৯৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হন। ১৯৯৬ সালে সদর নির্বাচনী এলাকা থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। ১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে আবারো নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। ২০০৪ সালের সম্মেলনে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পুনরায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর ১৭ অক্টোবর-২০২২ তারিখে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনি পুনরায় নির্বাচিত হন। বর্তমানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে একজন কর্মী হিসেবে তিনি বেকারমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত, মাদকমুক্ত, আধুনিক উন্নত সাতক্ষীরা গড়তে বদ্ধপরিকর। তার ৭১তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জেলার রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের মানুষ। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত আমি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। ওইসময় জননেত্রীর নজরে এসেছিলাম। ১৯৯৬ সালে একপ্রকার ডেকে নিয়ে আমাকে নির্বাচনে দাড় করিয়ে দিয়েছিলেন। এ জন্য আমি নেত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। দলের সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছিলো। কিন্তু ছয় হাজার ভোটে হেরে গিয়েছিলাম। পরে আবারো আমাকে সুযোগ করে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য, তখনও হেরে যাই। আসলে তখন এ এলাকাটি জামায়াত অধ্যুষিত ছিলো। তবে, এখনো আমি প্রত্যাশী। দল বা মাননীয় নেত্রী যদি সেই সুযোগ করে দেন তাহলে সকলকে সাথে নিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবো। অনেক আগে থেকে আমি জনগণের জন্য কাজ করছি। ৭১তম জন্মদিনে তিনি সকলের দোয়া ও আশীর্বাদ কামনা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।অনুষ্ঠানে উপস্হিত সকলেই আলহাজ্ব মো: নজরুল ইসলামকে সংসদ সদস্য হিসাবে দেখতে চাই, এ জন্য আওয়ামীলীগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সু দৃষ্টি কামনা করেন সাতক্ষীরা সদরের সর্বস্তর জনগন।সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন শেখ আজমির হোসেন বাবু।