অনলাইন ডেস্ক ::
খুলনায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া নতুন তিন সংসদ সদস্য প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদ এস এম কামাল হোসেনের। খুলনা-৩ আসনের নৌকা প্রতীকের এই প্রার্থী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর বার্ষিক আয় ৪৭ লাখ ২৭ হাজার টাকা। সম্পদ রয়েছে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার। কামালের স্ত্রীর সম্পদ রয়েছে ৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার।
নতুন প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে কম সম্পদ খুলনা-৬ আসনের মো. রশীদুজ্জামান মোড়লের। তাঁর বার্ষিক আয় মাত্র ৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। আর ১০ বছর পর মনোনয়ন ফিরে পাওয়া খুলনা-১ আসনের সাবেক এমপি ননী গোপাল মণ্ডলের বার্ষিক আয় ১৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। প্রার্থীদের হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
পেশায় ব্যবসায়ী ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন। তিনি মাস্টার্স পাস। তাঁর বিরুদ্ধে জরুরি বিধিমালায় একটি মামলা ছিল। সেটিতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়েছিল পুলিশ।
হলফনামার তথ্য বলছে, কামাল হোসেনের বার্ষিক আয় ৪৭ লাখ ২৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে ব্যবসা থেকে বছরে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং এফডিআর ও ব্যাংক থেকে লভ্যাংশ পান ১৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় বছরে (ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী) ৩০ লাখ ৫ হাজার টাকা।
কামালের সম্পদ রয়েছে মোট ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার। এর মধ্যে ২০ লাখ ১৭ হাজার নগদ টাকা, ব্যাংকে জমা ২৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা স্থায়ী আমানত, ২০ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি, গৃহস্থালি দ্রব্য এবং ব্যবসার মূলধন ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৮১ দশমিক ৮৪ ডেসিমেল কৃষি জমি, ৩ কাঠা অকৃষিজমি এবং ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকা দামের একটি দোকান রয়েছে।
কামাল হোসেনের স্ত্রী শিক্ষকতা পেশায় জড়িত। তাঁর সম্পদ রয়েছে ৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার। এর মধ্যে ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট, ৩৫ লাখ ২৮ হাজার নগদ টাকা, ব্যাংকে জমা ২৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, ১ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে। তাঁর ছেলে ও মেয়ের যৌথ নামে একটি ফ্ল্যাট ছাড়াও তাদের ৭৭ লাখ ৪২ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে।
খুলনা-১ আসন থেকে ২০০৮ সালে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ননী গোপাল মণ্ডল। নানা অভিযোগে ২০১৪ সালে তিনি মনোনয়নবঞ্চিত হন। প্রায় ১০ বছর পর আবার তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। হলফনামায় দেখা গেছে, ননী গোপাল মণ্ডল বিএ পাস। এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা ছিল। একটিতে তিনি খালাস, অন্যটিতে অব্যাহতি পেয়েছেন। ধান, তরমুজ ও মাছ উৎপাদন এবং বিক্রিকে পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর বার্ষিক আয় ১৭ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা। আয়ের পুরোটাই আসে কৃষি খাত থেকে।
ননী গোপালের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ৩০ লাখ ১৩ হাজার টাকা এবং ব্যাংকে রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। উপহার হিসেবে পাওয়া ১৫ ভরি স্বর্ণের মালিক তিনি। স্থাবর সম্পদের মধ্যে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৪ দশমিক ১৮ একর কৃষিজমি ছাড়াও ছোট ছোট ভাগে আরও অনেক কৃষিজমি রয়েছে তাঁর। এ ছাড়া ১০ কাঠা অকৃষিজমি, ৬৬ শতক জমিসহ একটি ভবন, ৩২ শতক জমির ওপর পৈতৃক বাড়ি, সাড়ে ৩ একর আয়তনের একটি মৎস্য খামারের মালিক তিনি। তাঁর স্ত্রীর নামে কৃষিজমি রয়েছে ৩ দশমিক ৩৪ একর।
খুলনা-৬ আসনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া রশীদুজ্জামান মোড়ল এমএ পাস। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে দুটি মামলা ছিল। দুটিতেই খালাস পেয়েছেন। কৃষি ও ব্যবসাকে আয় হিসেবে দেখিয়েছেন তিনি। তাঁর বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে বছরে ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, বাড়ি ভাড়া থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে আয় করেন ২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রী শিক্ষকতা পেশায় জড়িত।
রশীদুজ্জামান মোড়লের সম্পদের মধ্যে নগদ ২ লাখ টাকা, ব্যাংকে জমা মাত্র ৫০০ টাকা, দশমিক ৬৬ একর কৃষিজমি, দশমিক ২৪ একর অকৃষিজমি, একটি আবাসিক ও একটি বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে। তাঁর স্ত্রীর রয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৬ একর কৃষিজমি এবং দশমিক ২২ একর অকৃষিজমি।