ডেস্ক রিপোর্ট ::
আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-১ আসনে দলীয় মনোনায়ন পাওয়ার পরেও দ্বন্দ্বে আর বিভক্তিতে জড়িয়ে পড়েছে আ.লীগ। বিদ্রোহী প্রার্থীর ব্যাপারে নমনীয় থাকবে আ.লীগ-এমন ঘোষণার পরে ইতোমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনায়ন জমা দিয়ে মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন একজন সাবেক সংসদ সদস্যসহ তিন প্রার্থী। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে।
সাতক্ষীরা-১ আসনে প্রার্থীরা হলেন-আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ স্বপন, জাসদের জেলা সভাপতি শেখ ওবায়দুস সুলতান বাবলু, ওয়ার্কার্স পার্টি মনোনীত এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ-এমপি, জাতীয় পার্টির সৈয়দ দিদার বখত, বাংলাদেশ কংগ্রেসের এড. ইয়ারুল ইসলাম, জাকের পার্টির মো: খোরশেদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান-স্বতন্ত্র, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম-স্বতন্ত্র, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এসএম মুজিবুর রহমান-স্বতন্ত্র, মুক্তি জোট শেখ মো. আলমগীর, মো. নুরুল ইসলাম-স্বতন্ত্র, তৃণমূল বিএনপি সুমি ইসলাম।
চলতি বছরের ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনায়ন দেন কলারোয়া উপজেলার সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মদ স্বপনকে। নৌকার কাক্সিক্ষত টিকিট পেয়েও টেনশনে তিনি। ইতোমধ্যে দলীয় তিন হেভিওয়েট নেতা গত ৩০ নভেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনায়ন জমা দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা হলেন-সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবর রহমান, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক এসএম মুজিবুর রহমান (সরদার মুজিব)।
এদিকে ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন দলীয় মনোনায়ন পাওয়ার পরে তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় দ্বন্দ্বে আর দ্বিধাবিভক্ততে জড়িয়ে পড়েছে তালা ও কলারোয়া উপজেলার আ.লীগ। এদিকে গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন বলেন, নৌকার সামনে কোন প্রার্থী টিকতে পারবেনা। একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নিজেদের হাতে লেখা চিঠি ফেসবুকে পোস্ট করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন।
তিনি বলেন, আমার শ্বশুর শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার বাদী ছিলেন। তার মৃত্যুন্তে আমি এফিডেফিট করে মামলার বাদী হয়েছি। দীর্ঘ ২১ বছর মামলা পরিচালনা করার পরে সব সাক্ষী একত্রিত করে কাক্সিক্ষত রায় এনে দিয়েছি। যারা এখন বিভ্রান্তিমূলক কথা বার্তা বলে বেড়াচ্ছে তাদের চরিত্র সম্পর্কে নেত্রী ভালো জানেন। আমি নৌকার মনোনায়ন পাওয়ার পরে তালাও কলারোয়ার মানুষের যে উল্লাস দেখেছি, তার সামনে কোন বুদ্ধিমান প্রার্থী দাঁড়াতে পারবেনা বলে আশা করি।
জেলা আ.লীগের কৃষি বিষায়ক সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরদার মুজিব বলেন, ২০১৩ সালে কলারোয়ার উপজেলায় ৫জন আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা করে জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা। দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরও এই হত্যাকান্ডের কোন বিচার হয়নি। কমপক্ষে দুইজন প্রার্থীর নাম উল্লেখ করে তারা মামলার আসামীদের প্রশ্রয় দিয়ে বিচার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেন।
তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ নুরুল ইসলাম বলেন, নেত্রী আমাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার মতো ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে আমরা প্রার্থী হয়েছে। আগামী ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নেত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।
অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি প্রকৌশলী মুজিবর রহমান বলেন, বিগত দিনে সংসদ সদস্য থাকাকালীন এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছি। এবার জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। অপর প্রার্থীরা মাঠে এসে তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করে দেখুক তারা পাশ করতে পারে কিনা।
মুস্তফা লুৎফুল্লাহ্ ভোটের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে বলেন, ওয়ার্কাস পার্টিসহ আ.লীগের ৮০ভাগ নেতাকর্মীরা এখনো চুড়ান্ত জোট মনোনয়নের অপেক্ষায় আছে। আমি নিজে জোট থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। দশম সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোট পড়েনি তারপরেও ৯৯হাজার ভোট পেয়েছিলাম। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আমার বিরুদ্ধে বিএনপির শক্ত প্রার্থী থাকার পরেও ৩ লাখ ৫০ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছি। এবার আমার দল ও ১৪ দলীয় জোট যে সিদ্ধান্ত নেবে আমি সেটাই মেনে নেব।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত বলেন, আমি এরশাদ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তালা-কলারোয়াসহ জেলায় অভাবনীয় উন্নয়ন করেছি। সাধারণ জনগণ আমার উপর আস্থাশীল আছে। জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল। যদি নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ঠিক রাখেন তাহলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমি বিজয়ী হব।
##