ডেস্ক রিপোর্ট ::
সাতক্ষীরা সদর ও পাটকেলঘাটায় বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষক। শীতে বিভিন্ন ধরণের রোগ দেখা দিচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শৈত্যপ্রবাহের ফলে বোরো ধানের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বীজতলার কচি পাতা লালচে হয়ে কুকড়ে গেছে, কোথাও কোথাও চারা মারা গেছে। এখন সন্ধা হলেই কৃষক বীজতলা পলিথিন পেপার দিয়ে ঢেকে রাখছে তারপরও বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে। সন্ধায় গ্রামের প্রতিটি চায়ের দোকানে বীজতলা কীভাবে রক্ষা করা যায় সে আলোচনা করছেন কৃষক। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মনির হোসেন বলেন, আমরা প্রতিদিন কৃষকদের সচেতন করছি এবং বলছি গরম পানি দিতে আর না দিতে পারলে বিকালে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে এবং সকালে সুর্য দেখা গেলে সরিয়ে ফেলতে হবে। তাছাড়া আমরা কৃষকদের থিয়োভিট স্প্রে করতে বলছি।
এদিকে গত কয়েক দিনের তীব্র শীত ও ঘনকুয়াশায় পাটকেলঘাটায় বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকেরা শীত ও কুয়াশার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বীজতলা রক্ষায় বিভিন্ন প্রকার ছত্রাকনাশক ছিটিয়েও ফল পাচ্ছেন না। প্রকৃতির এ রূপ দীর্ঘ সময় থাকলে এবার উপজেলায় বোরোর চারার সংকট দেখা দিতে পারে বলে ধারনা করছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, তালায় এ বছর ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে লক্ষে কৃষক বীজতলা তৈরী করেছে।
উপজেলার রাজেন্দ্র পুর গ্রামের কৃষক অশোক কুমার ঘোষ ও জুজখোলা গ্রামের আব্দুল হামিদ জানান, বোরোর বীজতলার অর্ধেকই শীত ও কুয়াশায় বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে নতুন করে আবারও বীজতলা তৈরি করতে হবে। যাঁরা অগ্রহায়নের মাঝামাঝি বীজতলা তৈরী করেছে তাদের চারা বড় হয়ে গেছে। পৌষ মাসে যারা বীজতলা তৈরি করে বীজ ফেলেছেন, তাঁরা সেই বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখে শীত ও কুয়াশা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।
বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ধানের বীজতলার অর্ধেকই শীত ও কুয়াশার কারণে মরে যাচ্ছে। কৃষকেরা বীজতলা রক্ষায় বিভিন্ন ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করছেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল পাচ্ছেন না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা বেগম জানান, শীত ও কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। দেরিতে বপন করা বীজতলাগুলোর চারা শীত ও কুয়াশায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে প্রতিদিন তিন-চার ঘণ্টা করে রোদ পাওয়া গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে। আবার অনেকে শীত ও কুয়াশা থেকে বীজতলা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন। এটা আধুনিক প্রযুক্তি। এতে ক্ষতির আশঙ্কা কম হবে।