অনলাইন ডেস্ক ::
জমে উঠেছে ঈদ রাজনীতি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাসের মাথায় উপজেলা নির্বাচন হওয়ায় সারাদেশে বইছে নির্বাচনী আমেজ। নির্বাচনে প্রার্থী ও তাদের সমর্থনকারী সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতারা ছুটে গেছেন এলাকায়। অন্যদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপির নেতাকর্মীকে হতাশা কাটিয়ে চাঙ্গা করতে এলাকায় গেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন-পরবর্তী রাজনীতির স্থবিরতা কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক মাঠের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এলাকামুখী হওয়ায় সারাদেশে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে ঈদ রাজনীতি।
সংসদ নির্বাচনের পর গুরুত্বপূর্ণ এই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মধ্যেই এবার উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। শুভেচ্ছা বিনিময়ের নামে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগ চালাচ্ছেন নেতারা। নির্বাচনী এলাকার ‘প্রভাব-প্রতিপত্তি’ ধরে রাখতে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে নামাটাই ক্ষমতাসীন নেতাদের লক্ষ্য। দলের সিংহভাগ নেতাই ঈদের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও তৃণমূল নেতাকর্মীর সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে এলাকায় যাচ্ছেন। ঈদের লম্বা ছুটি কাজে লাগিয়ে কর্মী-সমর্থকদের আবারও চাঙ্গা করতে চাইছেন রাজপথের সরকারবিরোধী প্রধান দলটির নেতারা। সেই সঙ্গে নির্যাতিত নেতাকর্মী এবং গুম-খুনের শিকার নেতাকর্মীর পরিবারের পাশেও দাঁড়াচ্ছেন তারা।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে অন্য রাজনৈতিক দলের অধিকাংশ নেতাও এবার নিজ নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। কেউ কেউ অবশ্য থাকছেন ঢাকাতেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যারা ঈদের দিনটি নিজ এলাকায় কাটাবেন, তারা ঈদ উৎসবে যোগদানের পাশাপাশি গণসংযোগ ও মতবিনিময়ের কাজটাও সেরে নেবেন। আর সবাই দুস্থদের মধ্যে জাকাত ও ফিতরা বিতরণ করছেন। সামাজিক-রাজনৈতিক-ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে, ঈদকার্ড, এসএমএস পাঠিয়ে এবং সোশ্যাল মিডিয়া, ব্যানার-পোস্টারের মাধ্যমে গণসংযোগ করছেন উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী ও তাদের সমর্থনকারী নেতারা। ঈদ বকশিশের নামে অনেক প্রার্থী দিচ্ছেন নগদ টাকা। নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের জন্য ঈদের দিন ভোজের আয়োজনও করছেন অনেকে। সব মিলিয়ে জাতীয় নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচনের আমেজে গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।
আওয়ামী লীগ
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ঈদের আগে রমজান মাসজুড়েই তারা মানুষের পাশে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে ইফতার পার্টি না করে অসহায়, দুস্থ ও গরিব মানুষের মধ্যে ইফতার ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। সেই সঙ্গে ঈদ উপহারসামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে। আর জাতীয় নির্বাচন-পরবর্তী প্রথম ঈদের দিনগুলোতেও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন তারা।
এদিকে, ঈদের মাত্র দুই সপ্তাহ পর চার ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ডামাডোল শুরু হচ্ছে। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনকে ঘিরে তৃণমূল বেশ জমজমাটও হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে ঈদ এসে পড়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীর পাশে থাকার আরেকটি সুযোগ এনে দিয়েছে নেতাদের। এ সুযোগ কোনোমতে হারাতে চাইছেন না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা। এ কারণে বেশির ভাগ নেতা এবার ঈদে নিজ নির্বাচনী এলাকায় কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঈদের টানা ছুটিতে এলাকায় গণসংযোগ ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে কাজ করবেন তারা। মন্ত্রী এবং দলীয় ও স্বতন্ত্র এমপিরাও একই লক্ষ্য নিয়ে এলাকামুখী হচ্ছেন। অবশ্য কিছু নেতা ঢাকায় ঈদ করবেন।
মন্ত্রী-এমপি-নেতাদের মধ্যে যারা ঈদে এলাকায় যাচ্ছেন, তাদের কারও কারও স্বজন ও পছন্দের নেতারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নেপথ্যে থেকে এসব প্রার্থীর পক্ষে কাজও করবেন অনেকে। যদিও আইন অনুযায়ী মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনে প্রত্যক্ষ প্রচারণায় নামতে পারেন না। আবার দল থেকে এবারের উপজেলা নির্বাচনকে ‘উন্মুক্ত’ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রার্থী ঘোষণাসহ কারও পক্ষে সমর্থন জানিয়ে প্রভাব বিস্তার ও হস্তক্ষেপ না করার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের প্রতি। এর পরও অনেকে এতসব নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভেতরে ভেতরে প্রচারণা চালাবেন ঈদের দিনগুলোতে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারও ঈদ করবেন রাজধানী ঢাকায় তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে। প্রতিবারের মতো ঈদের দিন আওয়ামী লীগসহ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, বিদেশি কূটনীতিক, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে তাঁর।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঈদ করবেন ঢাকায়। তবে নোয়াখালীতে নিজ নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীর খোঁজ-খবর রাখছেন তিনি। অসুস্থতার কারণে কয়েক দিন আগে বিদেশ থেকে ফলোআপ চিকিৎসা নিয়েছেন। দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক-মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকায় ঈদ করবেন।
অন্য নেতা ও মন্ত্রী অনেকে নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদের নামাজ পড়ার পাশাপাশি গণসংযোগ করবেন নেতাকর্মীর সঙ্গে। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রাম, ড. আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান ফরিদপুরের মধুখালী-আলফাডাঙ্গা-বোয়ালমারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, মাহবুবউল-আলম হানিফ কুষ্টিয়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গাজীপুরের কালিয়াকৈর, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন নেত্রকোনা, বি এম মোজাম্মেল হক শরীয়তপুর, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জয়পুরহাট, মির্জা আজম জামালপুর, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন পটুয়াখালী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন নরসিংদীর মনোহরদী-বেলাব, শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল চট্টগ্রাম, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দিনাজপুরের বিরল-বোচাগঞ্জ এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ঢাকার কেরানীগঞ্জে ঈদ করবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও পাটমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ঈদ উৎসবটা সকলের জন্য আনন্দের। মন্ত্রী-এমপি ও নেতারা যারা মানুষের জন্য রাজনীতি করেন, তারাও চেষ্টা করেন এই আনন্দটা নেতাকর্মী ও মানুষের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে। এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম হবে না। এ ছাড়া সবাই চেষ্টা করবেন যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়াতে।
বিএনপি
বিএনপি নেতারা বলছেন, বিগত আড়াই মাসের সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর তৃণমূলকে নিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করতে চান তারা। ঈদের দিনগুলোতে নেতাকর্মীকে আবারও চাঙ্গা করতে কাজ করছেন নেতারা। একই সঙ্গে গুম-খুন আর নির্যাতিত ও কারাবন্দি নেতাকর্মীর পরিবারের খোঁজ নেবেন। ঈদ আয়োজনের মধ্যেই দেওয়া হবে দলের নির্দেশনা। সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনকে ভোটারবিহীন ও সরকারকে জনসমর্থনবিহীন উল্লেখ করে জনমত তৈরিতে মতবিনিময় সভা, উঠান বৈঠক ইত্যাদিসহ সভা-সমাবেশের আয়োজনও করছেন বিএনপি নেতারা।
এর আগে রোজার মাস থেকেই সারাদেশের নির্যাতিত নেতাকর্মী এবং গুম-খুনের শিকার নেতাকর্মীর পাশে দাঁড়িয়েছিল বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার নিয়ে তৃণমূলে ছুটেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কারাগারে আটক কয়েক শতাধিক নেতাকর্মীর খোঁজ নিতে ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পাজামা-পাঞ্জাবি ও শাড়ি উপহার দিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে টিম গঠন করা হয়েছে। যাদের মাধ্যমে রমজান মাসজুড়ে ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়। দলের নেতাকর্মী ছাড়াও সারাদেশে অসহায়-দুস্থদের জন্য বস্ত্র ও খাবার বিতরণ করছেন দলটির নেতারা। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে সাধ্যমতো সব সাংগঠনিক জেলায় ইফতার মাহফিলের আয়োজনও হয়েছে রমজান মাসজুড়ে।
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাঁর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা দেখা করবেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে পরিবার ও স্থানীয় নেতাকর্মী নিয়ে ঈদ উদযাপন করবেন। সেখানে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিণী ও দুই মেয়েও ঈদ পালন করবেন।
এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় ঈদ করবেন। তবে ঈদের দিন নিজ এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে যেতে পারেন তিনি। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খান, স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঈদের দিন ঢাকায় থাকবেন। এ ছাড়া সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারত এবং চিকিৎসার জন্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দেশের বাইরে ঈদ করবেন। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভীও ঢাকায় ঈদ করবেন।
বিভিন্ন মামলায় কারাবন্দি কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নির্বাহী সদস্য লুৎফুজ্জামান বাবর প্রমুখের ঈদের দিনটি কারাগারেই কাটবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ঈদ ঘিরে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা সেতুবন্ধ তৈরি হয়; যেটা কাজে লাগিয়ে দলের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো যায়, আবার জনমতও সৃষ্টি করা সম্ভব। বিএনপি সেটাই করবে।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাজাহান বলেন, ঈদ উপলক্ষে নোয়াখালীর গ্রামের বাড়ি যাবেন তিনি। সেখানে তিনি কারা নির্যাতিত নেতাকর্মীর বাড়ি বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যারা মামলা-হামলায় পর্যুদস্ত, গুম-খুন হয়েছেন– সেসব পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করবেন তিনি।
আরেক ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ঈদের সময় এলাকার মানুষের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন। দেশে এখন চরম সংকট চলছে। এই সংকট সমাধানে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আন্দোলনকেন্দ্রিক আলোচনা করবেন।