ডেস্ক রিপোর্ট ::
সাতক্ষীরার বক্ষব্যধি ক্লিনিকের চিকিৎস্যক ও দায়িত্বরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়মিত অনুপস্থিতির কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগিরা। বর্হিবিভাগ থেকে টিকিট কেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন জেলার দূরদুরান্ত থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা। কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে সাতক্ষীরার একমাত্র বক্ষব্যধি ক্লিনিকটি।
সরেজমিনে সোমবার (১৫ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা পৌর সদরের পারকুখরালী মিয়াসাহেবেরডাঙ্গীতে অবস্থিত বক্ষব্যধি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা গেছে বহি:বিভাগে রোগী দেখানোর জন্য টিকিট দিচ্ছেন নার্স্টি স্টাফ সিবাজুল ইসলাম। এছাড়া ক্লিনিকে উপস্থিত ছিলেন সুপার আকলাক ও বৃষ্টি নামের একজন স্টাফ। এসময় পুরো ক্লিনিক ঘুবে আর কারো দেখা মেলেনি। অথচ বক্ষব্যধি ক্লিনিকে চিকিৎস্যকের দায়িত্বে রয়েছেন ডা. সুব্রত গাইন, মেডিকেল এসিসটেন্ট হিসেবে রয়েছেন নাজনিন সুলতানা, ফার্মসিস্ট নিভা মজুদার ও অফিস সহকারি বাপ্পাসহ মোট ১১জন কর্মকর্তা কর্মচারী
এদিকে ক্লিনিকে এসে কেউ খোঁজ খবর নিচ্ছে বিষয়টি জানতে পেরে উপস্থিত থাকা একজন স্টাফ মোবাইলে কয়েকজনের কাছে ফোন করেন। এর কিছুক্ষণ পরে এক্সরে টেকনেশিয়ান শেখ নোমান, ফার্মসিস্ট নিভা মজুদার ও হোম ভিজিটর জয়নাব ক্লিনিকে আসেন। এক্সরে রুম বন্ধ কেন জানতে চাইলে টেকনেশিয়ান শেখ নোমান বলেন, আমি ক্লিনিকে এসে কি করবো, তিনমাসের বেশি সময় ধরে এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
হোম ভিজিটর জয়নাব বলেন, আমি ক্লিনিকের সরকারি কোয়াটারে থাকি। সকালে একবার এসে কোয়াটারে চলে গিয়েছিলাম। সরকারি কোয়াটারে থাকার অনুমতি কিভাবে পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যাবেরা বলেছেন তাই থাকি, আমরা লিখিত কোন অনুমতি নেই। এছাড়া ক্লিনিকের বাউন্ডারির মধ্যে থাকা সব গাছগাছালি আমি দেখা শুনা করি। সেজন্য স্যারেরা আমাকে কোয়াটারের থাকার সুযোগ দিয়েছেন। বাগানের আম, কাঁঠাল, নারিকেল ও ডাব কি করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিজে থেকে লোক দিয়ে পাড়িয়ে ক্লিনিকের স্টাফদের কিছু দেই ও বাকি সব ফলফলাদি ও ওষুধ সিভিল সার্জন অফিসের বড়বাবু আশিক নেওয়াজের বাসায় পাঠাই।
বিক্ষব্যধি ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা শহরের পলাশপোল এলাকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি সকাল ৯টার সময় এসে বর্হিবিভাগ থেকে টিকিট সংগ্রহ করে বসে আছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ডাক্তারের দেখামেলেনি। তার মতো আরো ২০/২৫ রোগী টিকিট সংগ্রহ করে ডাক্তাবের অপেক্ষায় বসে আছেন। এখন শুনছি ডাক্তার আসবেন না। ডাক্তার আসবে জানতে পেরে দূরদূরান্ত থেকে আসা অনেক রোগী ফিরে গেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডা. সুব্রত গাইন ও মেডিকেল এসিসটেন্ট নাজনিন সুলতানা প্রায়ই সময় ক্লিনিকে অনুপস্থিত থাকেন। তাদের অনুপস্থিতির কারণে ক্লিনিকের অন্যান্য স্টাফরাও ঠিকমত তাদেও দায়িত্ব পালন না করে মাসে মাসে বেতন ভাতা তুলে নিয়ে যান। ফলে এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
এবিষয় জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে সিভিল সার্জন অফিসের বড়বাবু আশিক নেওয়াজ জানান, অফিসার একজন ছুটিতে থাকলেও একজনতো থাকা উচিত। বিষয়টি তিনি সিভিল সার্জনকে জানাতে বলেন। তবে বক্ষব্যধি ক্লিনিকের ফলফলাদি ও ওষুধ তার বাসায় পাঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। বিষয়টি জানতে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. শেখ সুফিয়ান রুস্তমের মোবাইল নম্বরে রিং করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।