ডেস্ক রিপোর্ট ::
৬ষ্ঠ উপজেলাা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনের আর মাত্র তিনদিন বাকি। নাওয়া খাওয়া ফেলে রাতদিন একাকার করে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
প্রচারণাও এগিয়ে চলছে বেশ জোরেশোরে। নির্বাচনকে ঘিরে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় ভোটারদের মধ্যে উম্মাদনায় কিছুটা ঘাটতি লক্ষনীয়। তারপরও এবারের উপজেলা পরিষদ র্নিবাচনে শ্যামনগরে ত্রি-মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। সাধারণ মানুষ আর ভোটারসহ কর্মী সমর্থকদের সাথে আলাপ চারিতায় রীতিমত আভাষ মিলেছে তিন প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাাড্ড লড়াইয়ের।
উল্লেখ্য, ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় আগামী ৮মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার দুই লাখ ৮৪হাজার চারশ’ ভোটার এবারের নির্বাচনে তাদের ভোটাধীকার প্রয়োগের সুযোগ পাবে।
অপরাপর প্রধান বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় শ্যামনগরে মুলত আ’লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগ-ই। বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সম্পাদক সাঈদ-উজ জামান ছাড়া এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন গোলাম মোস্তফা বাংলা ও কৃষ্ণপদ মন্ডল। তারা দু’জন যথাক্রমে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলার কৈখালী ইউনিয়ন আ’লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক।
সরকারি দলের তিন নেতা এবারের নির্বাচনে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই অবতীর্ন হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মী সমর্থকরাও বিভক্ত হয়ে পড়েছেন তিন ভাগে। একইভাবে দলীয় শীর্ষ নেতাদের অনেকে সরাসরি কোন কোন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনায় অংশ নিলেও অনেকে আবার কৌশলী ভুমিকা নিচ্ছেন। যার ফলে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে উম্মাদনার ঘাটতি থাকলেও তীব্র গরম উপেক্ষা প্রতিদ্বন্দ্বী তিন শিবিরের জমজমাট তৎপরতায় তীব্র লড়াইয়ের পুর্বাভাষ মিলছে শ্যামনগরে।
স্থানীয় ভোটার, সাধারণ মানুষ ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসহ তাদের কর্মী সমর্থকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সাড়া কিছুটা কম। তবে সরকারি দলের তুলনামুলক তিন তরুন নেতার এবারের লড়াই উপভোগ করতে মুখিয়ে রয়েছেন সমগ্র উপজেলাবাসী। একইভাবে কোন প্রার্থী বিজয়ী হলে সেবার মান উন্নয়নসহ সাধারন মানুষের আশা আকাংখার প্রতিফলন ঘটবে সে চিন্তাও করছেন অনেকে।
কাঁচড়াহাটি গ্রামের উৎপল মন্ডল জানান, যে নেতা সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে চলবেন তেমন কাউকে তারা বেছে নিতে চান। বিচারপ্রার্থীরা যেন নায্য বিচার বঞ্চিত না হয় এমন প্রার্থীকে তারা ভোট দেবেন। ভোটারদের মধে আগ্রহ কম-উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন সব দলের অংশগ্রহন না থাকায় ভোটাররা কিছুটা হতাশ। তবে তিন প্রার্থী ও তাদের উজ্জীবিত কর্মী সমর্থকরা শেষ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য পরিমান ভোটারকে কেন্দ্রে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে তফশীল ঘোষনার পর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকলেও শেষ মুহুর্তে এসে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এজেন্টকে ভীতি প্রদর্শসহ পোষ্টার ছিড়ে ফেলার অভিযোগ তুলেছেন কোন কোন প্রার্থী।
উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী উপজেলা হিন্দু পরিষদ নেতা ও কৈখালী ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা কৃষ্ণপদ মন্ডল অভিযোগ করেন উপজেলার ঈশ^রীপুরের ১১টিসহ প্রায় ১৪টি কেন্দ্রে কেউ এজেন্টের দায়িত্ব নিতে চাইছে না। ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী গোলাম মোস্তফার ভাই ঈশ^রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং তারা উক্ত এলাকায় প্রচন্ডভাবে প্রভাবশালী। এছাড়া তার প্রায় ষাট হাজার পোষ্টার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা লোকজন ছিঁড়ে ফেলেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। তবে গোলাম মোস্তফা জানান সাংগঠনিকভাবে দুর্বল বলে কৃষ্ণপদ মন্ডল অনেক স্থানে এজেন্ট দিতে পারছেন না। নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে তিনি কৌশলের অংশ হিসেবে মিথ্যা প্রচারনা ছড়াচ্ছেন।
অপর চেয়ারম্যান আনারষ প্রতীকের প্রার্থী সাঈদ-উজ জামান বলেন তীব্র গরমের কারনে রাস্তাঘাটে লোকজন কম। তবে উঠান বৈঠকসহ বাড়ি বাড়ি যেয়ে ভোটারদের সাথে কথা বলে তারা আশ^স্থ। নির্বাচনী পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করলে ভোটাররা উৎসবের আমেজ নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে মুখিয়ে রয়েছেন।