★ ৫৪ বছর মানব রচিত আইনে দেশ চলেছে
★ আল্লাহর আইনে রাষ্ট্র সমাজ ও বিচার পরিচালনা করতে হবে
★ যারা আল্লাহর আইনে রাষ্ট্র সমাজ বিচার পরিচালনা করেনা তারা কাফের ফাসেক জালেম
এস.কে হাসান ::
আশাশুনিতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত আমীর ও বর্তমান কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জগদ্দল পাথর স্বৈরাচারী খুনী হাসিনা সরকার দেশ শাসন করেছে। আল্লাহ মেহেরবানী করে তাদেরকে বিদায় করেছে। যারা স্বৈরাচার হটাতে আন্দোলন করে শহীদ হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে মাফ করে দিন। যারা আহত হয়েছে তাদেরকে সুস্থতা দান করুন। বিগত ৫৪ বছরে মানব রচিত আইনে দেশ চলেছে, মানব রচিত আইনে মানুষ শান্তি পায়না। যারা আল্লাহর আইনে রাষ্ট্র সমাজ ও বিচার পরিচালনা করেনা, তারা কাফের ফাসেক ও জালেম। বিশ্বে ২টি আইন আছে- একটি অহী ভিত্তিক, অপরটি তাগুতি। অহি ভিত্তিক আইন হলো আল কোরানের আইন আর তাগুতি আইন হলো মানব রচিত, ধর্ম নিরপেক্ষ, জাতীয়তাবাদ ও পুঁজিবাদ ইত্যাদি। তাগুতিতে ভুল আছে কিন্তু অহীর মধ্যে কোন ভুল নেই। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, মানুষের জীবন গড় ৫০/৬০ বছরের। ৫০/৬০ বছরে আরাম আয়েশ করতে চান, না মৃত্যুর পরে কোটি কোটি বছরে শান্তিতে থাকতে চান? শান্তি চাইলে অহীর আইনে জীবন চালাতে হবে। আল্লাহর নবী ন্যায় প্রতিষ্ঠা, অন্যায়কে প্রতিহত করার জন্য হিলফুল ফুজুল গঠন করেছিলেন। জামাতবদ্ধ জীবন যাপন ফরজ।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে সাবাধীনতা পেয়েছি, তখন ভোটের ও ভাতের অধিকারের কথা বলা হয়েছিল। অথচ কয়েকদিন আগেও বলা হচ্ছে আমার ভোট আমি দেব, আপনারটাও আমি দেব। স্বৈরাচার হায়েনার দল মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। যুবক ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়ে মাঠে নেমে একদফা আন্দোলন করে রক্তের বিনিময়ে দেশকে দ্বিতীয়বার স্বাধীন করেছে। প্রথমবার কথা বলতে পারলাম না, দ্বিতীয়বার কথা বলার সুযোগ হয়েছে; ন্যায় বিচার এখনো কায়েম হয়নি। আল্লাহর আইন চালু হলে ন্যায় বিচার হবে। যে জাতি একবার জাগে সে জাতি পরাজিত হয়না। আমরা তৃতীয়বার স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, মানব রচিত আইন দেশে চলতে দেয়া হবেনা বলে তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
আশাশুনি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ২ টায় অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে (পুরুষ) তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপরোক্ত কথা বলেন। সকাল ১০ টায় একই স্থানে মহিলা কর্মী সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন। আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের আমীর আবু মুছা তারিকুজ্জামান তুষারের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী আঃ সালামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ও অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী, খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আঃ খালেক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য সাতক্ষীরা-৩ আসনে জামাত মনোনীত প্রার্থী হাফেজ মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য জেলা আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য জেলা নায়েবে আমীর শেখ নুরুল হুদা, কেন্দ্রীয শুরা সদস্য জেলা সেক্রেটারী মাওঃ আজিজুর রহমান, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য সাবেক এমপি সাতক্ষীরা-৪ আসনের নমিনী গাজী নজরুল ইসলাম, জেলা সহকারী সেক্রেটারী মাহবুবুল আলম, জেলা কর্ম পরিষদ সদস্য এড. আজিজুল ইসলাম, কর্ম পরিষদ সদস্য এড. সোহরাব হোসেন মুকুল, উপাধ্যক্ষ আঃ সবুর, মাওঃ আবু বক্কর সিদ্দিক, সাবেক আমীর ডাঃ নূরুল আমিন, শহর আমীর জাহিদুর রহমান মুকুল, কালিগঞ্জ আমীর আঃ ওহাব সিদ্দিকী, উপজেলা নায়েবে আমীর নূরুল আফসার মোর্তজা, শুরা সদস্য জজ কোর্টের এপিপি এড. শহিদুল ইসলাম, জেলা শিবির সভাপতি ইমামুল হোসেন প্রমুখ।
সম্মেলনে মুহাদ্দিস আঃ খালেক বলেন, জালেম সরকারের কাছে আমরা মাথানত করি নাই। রক্ত দিয়েছি, জেল খেটেছি, লড়াই করেছি। আগামী নির্বাচনে রবিউল বাশারকে বিজয়ী করাতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাব ইনশাল্লাহ।
মুহাদ্দিস রবিউল বাশার বলেন, বিদায়ী স্বৈর শাসক, জালিম ও খুনী ছিল। তারা জামাত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলায় বিচারিক হত্যা করেছিল। এমন কোন নেতা ছিলনা যাদের নামে মামলা দেয়া হয়নি।
জেলা আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল বলেন, মানবতা বিরোধী অপবাদ দিয়ে জামাত নেতাসহ আলেমে দ্বীনকে ফাঁসি, অসংখ্য সোনার মানুষকে পাখির মত গুলী করে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতন করেও ইসলামী আন্দোলনকে দমান যায়নি। সকল ইসলামী ও সমমনা দলকে সাথে নিয়ে দেশে তৃতীয় মোর্চার উদয় হবে।