॥ অমিত কুমার ॥
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের আম গাছগুলোতে মুকুলে ভরে যেতে শুরু করেছে। নানা ফুলের সাথে সৌরভ ছড়াচ্ছে আমের মুকুলও। আমের মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে প্রকৃতি। মৌমাছির দল গুনগুন শব্দে, মনের আনন্দে আহরণ করে মধু। মৌমাছির এ গুন গুন সুরও কেড়ে নেয় অনেক প্রকৃতি প্রেমীর মন। মুকুলের সেই সুমিষ্ট সুবাস আন্দোলিত করে তুলছে মানুষের মন। এখন থেকেই গাছে মুকুল দেখা দিতে শুরু করেছে। এখন সময়ের ব্যবধানে তা আরো বাড়ছে। এ বছর গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি। আমচাষী এবং সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন। ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য, প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং সময়মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ভালো ফলন হবে। আর এ কারণেই আশায় বুক বেধে আম চাষিরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। তাদের আশা, চলতি মৌসুমে তারা আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। পাটকেলঘাটা থানাসহ উপজেলার প্রায় সব এলাকাতেই রয়েছে আমবাগান। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই আম বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। তবে গড়ে ওঠা নতুন আম বাগানগুলোর প্রায়ই বনেদি জাতের। বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, গোবিন্দ ভোগ, লতা, বোম্বায় লতা, ফজলি, হিমসাগর, আমরুপালী, কাঁচা মিঠা, আশ্বিনা জাতেরই গাছ বেশি হচ্ছে। পাটকেলঘাটার সরুলিয়া এলাকায় আম বাগানের সংখ্যা বেশি।
ওই এলাকার আমচাষী মাহাবুব হোসেন,রিপন হোসেন ও উত্তম ঘোষ জানান, এ বছরের আবহাওয়া আমের জন্য অনুকূলে রয়েছে। গত বছরের চেয়ে টানা শীত ও কুয়াশার তীব্রতা এ বছর অনেক কম। গতবারের মতো মৌসুমের শুরুতে শিলাবৃষ্টিও হয়নি। এরই মধ্যে অনেক গাছে মুকুলে ভরে গেছে। আশা করা যাচ্ছে, ফালগুনের মধ্যে পাটকেলঘাটাসহ উপজেলার আম গাছগুলোতে পর্যাপ্ত মুকুল আসবে। পরিস্থিতি অনূকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে। আমচাষী ব্যবসায়ী কুমিরার জাহাঙ্গীর ও তালার অজিয়ার রহমান, শফিকুল হোসেন জানান, কৃষি অফিসারদের পরামর্শে গাছে মুকুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিন আগেই তারা পুরো গাছ সাইপারম্যাক্সিন ও কার্বারিল গ্রুফের কীটনাশক দিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করে গাছ ধুয়ে দিয়েছি। এতে গাছে বাস করা হপার বা শোষক জাতীয় পোকাসহ অন্যান্য পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। যদি সঠিক সময়ে হপার বা শোষক পোকা দমন করা না যায় তাহলে আমের ফলন কমে যাবে বলে জানান। সর্বপরি আশা করা যায়, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা হাজিরা বেগম জানান, তালায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপকভাবে আমচাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ভালো ফলন হবে।