ডেস্ক রিপোর্ট ::
সাতক্ষীরার তালা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জালালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং শালিখা ডিগ্রি কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক এস এম বিপ্লব কবীরকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা লুৎফুল্লাহসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ মার্চ) সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৩ এ মামলা করেন তালা উপজেলার দোহার গ্রামের মৃত শেখ শের আলীর ছেলে ও নিহতের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম।
আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিদুল হাসান মামলা আমলে নিয়ে আগামী ২৩ মার্চের মধ্যে এজাহার হিসেবে গণ্য করে আদালতকে জ্ঞাত করার জন্য তালা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সাবেক (ডিবি) ওসি একেএম আজমল হুদা, ডিবি পুলিশের কনস্টেবল হাসিবুর রহমান, ফারুক চৌধুরী, রাসেল মাহমুদ, শিকদার মনিরুজ্জামান, তালা থানার সাবেক ওসি আবু বকর সিদ্দিক, এসআই আকরাম হোসেন, এএসআই গোলাম সরোয়ার, জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম মুক্তি, তালার মাঝিয়াড়া গ্রামের যুবলীগ নেতা শেখ আবু জাফর, দোহার গ্রামের যুবলীগ নেতা শাহিন শেখ, জালালপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আমিরুল শেখ, স্বেচ্ছাসেবকলীগকর্মী রুহুল আমিন শেখ মিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আমজাদ আলী, যুবলীগ নেতা ইদ্রিস সরদার, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল সরদার, যুবলীগ নেতা আক্তারুল সরদার, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা মহিবুল্লাহ মোড়ল, উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শেখ আনারুল ইসলাম ও জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাম প্রসাদ দাশ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শালিখা ডিগ্রি কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক ও বিএনপি নেতা বিপ্লব কবীরের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আসামিরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। একপর্যায়ে বিপ্লব বিষয়টি জানতে পেরে তিনি রাতে নিজ বাড়িতে না থেকে এ মামলার ১নং সাক্ষী ছবেদ আলী মোড়লের বাড়িতে লুকিয়ে থাকতেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জানার পর ২০১৪ সালের ১৮ জুলাই রাত ১২টার দিকে আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে পিস্তল, কাটারাইফেল বন্দুক, রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও লোহাররডসহ ছবেদ আলী মোড়লের বাড়ি ঘিরে ফেলেন। একপর্যায়ে তারা ছবেদ আলীর ঘরের দরজা ভাঙার চেষ্টা করলে এতে তিনি বাধা দেন। বাধা দেয়ায় তার হাতের কনুইতে ১৩ নং আসামি শাহীন শেখ পিস্তলের গুলি করেন। এ সময় অন্য আসামিরা লোহার রড ও রাম দা দিয়ে তার দুই পা ভেঙে ফেলেন। এতে তার স্ত্রী রিজিয়া বাধা দিতে আসলে আসামিরা তাকেও মারপিট করেন। এর কিছু দিন পর তিনি মারা যান। এরপর দরজা ভেঙে আসামিরা বিপ্লবকে টেনে-হিচড়ে ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসেন। পরে তারা লোহার রড দিয়ে তার মাথার পিছনে বাড়ি মারলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। লুটিয়ে পড়ার পর আসামিরা তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জখম করেন এবং ডান পায়ে কাটারাইফেল দিয়ে তিনটা গুলি করেন। একপর্যায়ে সেখানে এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবিরের নির্দেশে বিপ্লবকে গাড়িতে তুলে ইসলাম কাটির দিকে নিয়ে যায়। ইসলাম কাটি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবু সাঈদ রাজা মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।