গোলাম সরোয়ার ::
সাতক্ষীরার সীমান্ত নদী ইছামতির অব্যাহত ভাঙ্গনে জেলার দেবহাটা উপজেলা সদরের সুশীলগাতি, দেবহাটা, ভাতশালা, নাংলা ও কোমরপুর এলাকার বসবাসরত মানুষজনের আতংকের মধ্যে দিন কাটছে। এরমধ্যে সবচেয়ে হুমকির মধ্যে রয়েছে দেবহাটা বিজিবি কোম্পানী ক্যাম্প। এছাড়া হারিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ পারের কৃষি জমিসহ বসতবাড়ি।
এব্যাপারে বিজিবি ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্ঠরা।
সীমান্ত নদী ইছামতির ভাঙ্গনের বিষয়টি নিশ্চিত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন -১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন জানান, জেলায় ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত নদী বেড়িবাধের মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার বেড়িবাধ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ। কিন্ত অর্থ বরাদ্ধ না পাওয়ায় এসব বেড়িবাধ মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না।
দেবহাটা বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার নায়েক সুবেদার ইমান আলী জানান, সীমান্ত নদীর বাংলাদেশ পাড়ে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বিজিবি দেবহাটা বিওপি ক্যাম্প। জরুরী ভাবে বেড়িবাধ সংস্কার করা না হলে ভারি জোয়ারে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে বিওপি ক্যাম্প। তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন আগেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সরেজমিনে পরিদর্শন করানো হয়েছে। কিন্ত তাদের বরাদ্ধ না থাকায় কাজ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।
দেবহাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হযরত আলী জানান, ইছামতি নদীর বেড়িবাধে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে করে থানার সীমানা প্রাচীর যে কোনো মহুর্তে ধসে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জরুরী ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিতে বলেন।
দেবহাটা উপজেলা সদরের সুশীলগাতি গ্রামের আব্দুল গনি ও গোলাম মোস্তফা জানান, নদী লাগুয়া বাড়ি হওয়ায় চরম ঝুকির মধ্যে রয়েছেন তারা। ইতিমধ্যে ইছামতির ভাঙ্গনে তাদের অনেক কৃষি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। সম্প্রতি ভাঙ্গন এতোই তীব্র আকার ধারন করেছে যে, বসতবাড়ি ঘর রক্ষা করা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।
একই উপজেলার কোমরপুর গ্রামের আফছার আলী জানান, ইছামতির ভাঙ্গনে তার বসতবাড়ির একাংশ নদীতে চলে গেছে। তাছাড়া এলাকার বহু মানুষজনের কৃষি হারিয়ে যাচ্ছে ইছামতি নদীর ভাঙ্গনে। তিনি জরুরী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাধ মেরামতের দাবি জানান।
দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, দেবহাটা উপজেলা সদর দিয়ে বয়ে চলা সীমান্ত নদী ইছামতির অব্যাহত ভাঙ্গনে উপজেলার সুশীলগাতি, দেবহাটা, ভাতশলা ও কোমরপুর এলাকার মানুষজন খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। শুধু তাই নয় উপজেলা বিজিবি কোম্পানী ক্যাম্প ও থানা প্রাচীর হুমকির মুখে রয়েছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে বাংলাদেশের জমি বা অন্যান্য বসতি হারিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তিনি বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জরুরী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাধ সংস্কার করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন -১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন জানান, জেলায় ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত নদী বেড়িবাধের মধ্যে সাড়ে তিন কিলোমিটার বেড়িবাধ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ। এরমধ্যে দেবহাটার উপজেলা সদরের সুশীলগাতি, দেবহাটা, ভাতশালা, কোমপুর ও নাংলা এলাকা। তিনি বলেন, এসব ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাধ জরুরী ভাবে মেরামতের জন্য বরাদ্ধ চেয়ে পাঠানো হলেও তা এখনো পাওয়া যায়নি। ফলে বেড়িবাধের সংস্কার কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
#