অনলাইন ডেস্ক ::
পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী পদে দলের এক বিশ্বস্ত নেতার নাম ঘোষণা করেছেন। ভোটে নাটকীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো দেশটির জনপ্রিয় এই নেতা এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর পদটি নিজ দলের দখলে রাখার প্রতিযোগিতায় নামলেন। খবর রয়টার্স ও দ্য ডনের।
বৃহস্পতিবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে কথা বলার পর দলটির নেতা আসাদ কায়সার এই ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, পিটিআইর মহাসচিব ওমর আইয়ুব খান প্রধানমন্ত্রী পদে দলের প্রার্থী হবেন। তিনি বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। আত্মগোপনে থেকেই তিনি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।
কায়সার বলেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কারচুপির ঘটনায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে পিটিআই।
তিনি আরও বলেন, তাঁকে নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে আসা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ করে জেইউআই-এফ, এএনপি ও কিউডব্লিউপির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করার নির্দেশ দিয়েছেন ইমরান খান।
কায়সার বলেন, আমরা সবাই একটি কৌশল তৈরি করতে চাই। কারণ জনগণের ম্যান্ডেট চুরি করা হয়েছে। এবারের নির্বাচন আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জালিয়াতির। এ নির্বাচনে বিশ্বাসযোগ্যতার ব্যাপক ঘাটতি ছিল।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের নির্বাচনে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের শতাধিক আসনে জয় পেয়েছেন। এ ছাড়া দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৯টি ও বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৪টি আসন জিতেছে। দেশটিতে কোনো দলই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
এরই মধ্যে নওয়াজের ছোট ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করার ঘোষণা দিয়েছে পিএমএল-এন ও পিপিপি। তবে সংসদ তারা এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার মতো সমর্থন পাননি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পাকিস্তানে ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন সম্পর্কে অবগত আছেন বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জঁ-পিয়েরে বুধবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, গত সপ্তাহে তরুণদের পাশাপাশি রেকর্ডসংখ্যক পাকিস্তানি নারী, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু ভোট দিয়েছেন। এ বিষয়ে বাইডেন অবগত আছেন। তিনি পাকিস্তানের জনগণকে সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিশেষ করে নির্বাচন কর্মী, সুশীল সমাজের সদস্য, সাংবাদিক এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক ও নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করেছেন বলে জানান পিয়েরে।
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান সুপ্রিম কোর্টের
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর বাণিজ্যিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী যাতে ব্যবসায়িক উদ্যোগের পরিবর্তে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগ দেয় তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসা এ নির্দেশনা দিয়েছেন। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সামরিক জমির ব্যবহারের একটি মামলায় তিন বিচারপতির বেঞ্চের নেতৃত্ব দেন তিনি।
বুধবার শীর্ষ আদালত জোর দিয়ে বলেছেন, দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই তাদের সাংবিধানিক সীমানার মধ্যে থাকতে হবে।মামলাটিতে করাচির ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের জমির অবৈধ ব্যবহারের প্রতি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। কৌশলগত উদ্দেশ্যে অধিগ্রহণ করা জমি পরে বাণিজ্যিক লাভের জন্য ব্যবহার করা হয়।