বি. এম. জুলফিকার রায়হান ::
তালা বালিয়াদহ বাজারের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভোগ দখলীয় জমি জোর দখল করে সেখানে ঘর নির্মান চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। জাল দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে এলাকার প্রভাবশালী একটি পরিবার রাতারাতি জমি দখল করে সেখানে ঘরবাড়ি নির্মানের পাঁয়তারা করছে করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সহ এলাকার সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার মোল্যা জানান, বালিয়াদহ বাজারের উপর অবস্থিত, বালিয়াদহ মৌজার এস.এ ৩৮৭ খতিয়ানের, ১৬০ নং দাগের ৫ শতক জমি রেজিষ্ট্রি দানপত্রসূত্রে মালিক হয়ে দীর্ঘ ৬/৭ বছর সেখানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভোগদখলে রয়েছে এবং জমির উপর সাইনবোর্ডও টানানো হয়। কিন্তু একই এলাকার প্রভাবশালী পরিবারের শেখ আবুল কাসেম জাল দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে ওই জমি তার দাবী করে এবং সেটেলমেন্ট রেকর্ড নিজ নামে তৈরি করে। এনিয়ে জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে অভিযোগ দায়ের করা হয়। যা চলমান আছে এবং আবুল কাসেমের অবৈধভাবে জমি দখল প্রতিরোধে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা (৪৮৯/২৪) দায়ের করা হয়, যা বিচারাধিন রয়েছে। অপরদিকে উপজেলা ভূমি অফিসে দায়ের করা অপর একটি অভিযোগ বিচারাধিন রয়েছে। কিন্তু কাসেমের ২ ছেলে শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং শেখ জিল্লুর রহমান সম্প্রতি ভাড়াটিয়া লোকজন এনে ওই জমি রাতের আধারে দখল করে সেখানে টিনের ঘেরাবেড়া দিয়ে বসত ঘর নির্মানের চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোল্লা নজরুল ইসলাম ও মোল্লা কবির হোসেন, শেখ আব্দুর রাজ্জাক সহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, তর্কিত ওই জমির মালিক তৎকালিন জমিদার কেদারনাথ গং। তিনি সহ তার পরিবারের লোকজন ভারতে চলে যান এবং সেখোনে অনেকেই মৃত্যুবরন করেছেন। পরবর্তীতে সরকারের আইনের বিধি মতে কেদারনাথ বংশের ওয়ারেশ হিসেবে অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায় ও অশিত চট্টোপাধ্যায় সাতক্ষীরার বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে ওয়ারেশ হিসেবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে উক্ত জমি স্থানীয় বালিয়াদহ গ্রাম উন্নয়ন কমিটির নামে লিখেদেন। দীর্ঘদিন ভোগ দখলের একপর্যায়ে গ্রাম উন্নয়ন কমিটি উক্ত জমি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্মানের স্বার্থে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতির নামে রেজিষ্ট্রি দানপত্র করে দেন। সেই থেকে দীর্ঘ ৬/৭ বছর উক্ত জমি নিজেদের পাকিস্তান আমলে কেনা দাবী করে তা দখলের চেষ্টা করে স্থানীয় আবুল কাসেম ও তার দুই ছেলে জাহাঙ্গীর এবং জিল্লুর রহমান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার মোল্যা বলেন, আবুল কাসেম তার রেজিষ্ট্রি দলিলের যে বর্ননা দিচ্ছেন তা পাকিন্তানী আমলে তালার সাব রেজিষ্ট্রি অফিস পোড়া সময়ের। ওই সময়ের দলিল দিয়ে ভূমি অফিস থেকে নাম পত্তন করতে ব্যর্থ হয়ে ১৯৮৩ সালে আর একটি জাল দলিল তৈরি করে। এই দলিলের নং অনুযায়ী দলিলের জমি দাতা ও ক্রেতার বাড়ি তালা উপজেলার শুভংকরকাঠি গ্রামে। জাল দলিল সৃষ্টির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের জমি দখল করার প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এব্যপারে জানতে চাইলে জাল দলিলের মাধ্যমে জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ জিল্লু রহমান বলেন, ওই জমি আমাদের ক্রয় করা এবং সেটেলমেন্ট রেকর্ড ও আমাদের নামে নাম পত্তনের মাধ্যমে খাজনার প্রদান করে জমি ভোগদখল করছি।
এবিষয়ে তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন জোয়ার্দ্দার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা চাই। অন্যথায় অবস্থার অবনতি হলে আমরা মানব্বন্ধন করতে বাধ্য হব।
##